মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত

মেরুদন্ড ও অমেরুদন্ড প্রাণীর পার্থক্য কি? মেরুদন্ড এবং অমেরুদন্ড প্রাণীর মধ্যে মূল পার্থক্য হল মেরুদণ্ড প্রাণীর কঙ্কাল রয়েছে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর কোন কঙ্কাল নেই। আপনি যদি মেরুদন্ড ও অমেরুদন্ড প্রাণীর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান এবং তিনটি অমেরুদন্ডী  প্রাণীর নাম, অমেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে উদাহরণ দাও এবং প্রাণীর ৫টি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি সম্পন্ন মনোযোগ সহ দেখতে থাকুন। 
মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য-merudondi vs omerudondi
আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। মেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে এবং অমেরুদণ্ডী প্রাণী কাকে বলে সাথে অমেরুদন্ড প্রাণীর পাঁচটি বৈশিষ্ট্য এবং মেরুদন্ডী প্রাণীর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন আমরা ঝটপট দেখে আসি মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য।

পেজ সূচিপত্র : মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত

      ভূমিকা      

এই পৃথিবীতে মহান আল্লাহ তায়ালা বহু ধরনের জীব প্রাণী তৈরি করেছেন। এই পৃথিবীতে দুই ধরনের জীব রয়েছেন এক মেরুদন্ডী এবং অন্য একটি অমেরুদন্ডী। অনেকে প্রশ্ন করেন মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য কি এদের কি কোন পার্থক্য রয়েছে?

হ্যাঁ অবশ্যই সব সময় মনে রাখবেন অমেরুদন্ডী প্রাণী গুলোর কোন কঙ্কাল থাকে না। আমরা হয়তো প্রত্যেকেই জানি যে মানব শরীরে কঙ্কাল রয়েছে এর কারণ হলো আমরা মেরুদন্ডী প্রাণী। এখন প্রশ্ন হল তাহলে অমেরুদন্ডী প্রাণী কারা? নিচে দেখে নিন অমেরুদন্ডী প্রাণী কারা? 

অমেরুদন্ডী প্রাণী কারা 

অমেরুদণ্ডী প্রাণী হল যাদের কোন মেরুদন্ড নেই যেমন পোকামাকড়, কাকড়া ,মাকড়সা কম্বোজ, কৃমি, কাকড়া, কেঁচো। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা অনুসারে এই পৃথিবীতে প্রায় ১,৩০০,০০০ ধরনের অমেরুদন্ডী প্রাণী রয়েছে। এই প্রাণীগুলোর কোন মেরুদন্ড নেই অথবা কঙ্কাল নেই। অমেরুদন্ডী প্রাণী থেকে উদ্ভব হয়েছে। 

রাস্তা পথের চলতে চলতে অনেকে আমরা রাস্তায় ছোট ছোট পিপড়া কিংবা কেঁচো দেখতে পাই এদের শরীর থেকে কোন কঙ্কাল পাওয়া যায় না এজন্য বিজ্ঞানীরা এদেরকে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলেছেন। অমেরুদন্ডী প্রাণীর বিশেষ পরিচিতির মধ্যে রয়েছে আর্থ্রোপড এবং মোলাস্কস পর্বের প্রজাতি। প্রিয় পাঠক বুঝেন তো আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন অমেরুদন্ডী প্রাণী কারা। এবার চলুন আমরা দেখে আসি অমেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে উদাহরণ দাও 

অমেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে উদাহরণ দাও

যে প্রাণীগুলোর শরীরে কোন মেরুদণ্ড কিংবা কশেরোকা থাকে না তাদেরকে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলে। মেরুদন্ড প্রাণীর শরীরে কেন্দ্রীয় মাঝ বরাবর একটি সুতার মতো অংশ থাকে যার তাদের স্নায়ুতন্ত্রকে সুরক্ষা দেয় কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে এমন কোন সুতা লক্ষ্য করা যায় না। অমেরুদন্ডী প্রাণীর কয়েকটি উদাহরণ হল কীট পতঙ্গ ,পোকামাকড়, শামুক, ঝিনুক।
পোকামাকড়ের শরীরে কোন কঙ্কাল থাকে না। মানুষের শরীরে যেমন কঙ্কাল রয়েছে অথবা হার রয়েছে। পোকামাকড়ের শরীরে এমন কোন কঙ্কাল কিংবা হার থাকে না এজন্য পোকামাকড়কে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলা হয়। পোকামাকড় আর্থ্রোপড পর্বের প্রাণী। আর্থ্রোপড পর্ব হল অমেরুদন্ডী প্রাণীর বৈশিষ্ট্য। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারি তাহলে মাছ কোন শ্রেণীর প্রাণী? অমেরুদন্ডী নাকি মেরুদন্ডী? 

মাছ মেরুদন্ডী নাকি অমেরুদন্ডী প্রাণী? 

মাছের শরীরে কোন কঙ্কাল নেই কিংবা মাছের শরীরে কোন হাড় নেই তাহলে মাছ মেরুদন্ডী প্রাণী নাকি অমেরুদন্ডী প্রাণী? শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন যে মাছ আসলে মেরুদন্ডী নাকি অমেরুদন্ডী? মাছের শরীরে হাড় না থাকলেও সুতোর মতো অংশ কাটা রয়েছে। এই কাটা তাদের স্নায়ুতন্ত্র কে রক্ষা করে। এছাড়াও মাছের প্রজনন প্রক্রিয়া সক্রিয় এবং মাছ জলজ উদ্ভিদ। এরা পানির সাথে খাপ খাইয়ে চলতে শিখে গেছে। এজন্য মাছকে মেরুদন্ডী প্রাণী বলা হয়। 

তাহলে পানিতে বসবাসকারী সকল প্রাণী কি মেরুদন্ডী প্রাণী? না পানিতে বিভিন্ন প্রাণী বসবাস করে যেমন অক্টোপাস শামুক ঝিনুক কাকড়া মাছ। কিন্তু এইসব প্রাণী মেরুদন্ডী প্রাণীর নয়। শামুক ঝিনুক কাকড়া অক্টোপাস এই প্রজাতির প্রাণী গুলো অমেরুদন্ডী এবং মাছ যার শরীরে সুতোর মতো অংশ রয়েছে তারা হলো মেরুদণ্ডী প্রাণী। মাছের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে যেমন চিংড়ি মাছ, তারা মাছ ,রুই মাছ ,কাতলা মাছ।

চিংড়ি মাছ এবং তারা মাছের শরীরে কোন সুতোর মতো কাটার অংশ নেই এজন্য চিংড়ি এবং তারা মাছ এরা উভয়ই অমেরুদন্ড শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু রুই মাছ কাতলা মাছ পাঙ্গাস মাছ শিং মাছ এরা মেরুদন্ডী প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত। প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মাছ মেরুদন্ডী নাকি অমেরুদন্ডী প্রাণী এবার চলুন আমরা দেখে আসি মেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে। 

মেরুদন্ডী প্রাণী বলতে বলছে যাদের শরীরে সুতার মতো শক্ত অংশ রয়েছে হতে পারে সেটি মাছের কাঁটা কিংবা হাড় অথবা কঙ্কাল। মেরুদন্ড প্রাণীর অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো এদের শ্রেণীর রক্ত সরবরাহ হয়। রক্ত চলাচল করে এবং মেরুদন্ড প্রাণীর শরীরে উন্নত স্নায়ুতন্ত্র থাকে। 

ক্লাস নাইনের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাতে বারবার এ প্রশ্নগুলো আসে যে মেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে এবং অমেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মূল পার্থক্য হল অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কঙ্কাল অথবা কষে দোকানে আর মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কঙ্কাল অথবা কশেরোকা রয়েছে এবং মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত সরবরাহ হয়। 
মেরুদন্ডী প্রাণীর উদাহরণ
  • মানুষ 
  • গরু 
  • পাখি
  • মাছ
  • ব্যাঙ 
  • সরীসৃপ
মানুষের শরীরে কঙ্কাল রয়েছে গরুর শরীরেও হাড় এবং কঙ্কাল রয়েছে একইভাবে পাখি মাছের মধ্যেও কঙ্কাল রয়েছে এই জন্য এদেরকে মেরুদন্ডী প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এই প্রতিটি প্রাণীর শরীরে রক্ত সরবরাহ হয় রক্ত চলাচল করে। এদের স্নায়ুতন্ত্র উন্নত মানের এবং এরা ফুসফুস ত্বক অথবা 

গিলের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস নাই এইজন্য এই প্রাণীগুলোকে মেরুদন্ডী প্রাণী হিসেবে অভিহিত করা হয় বিজ্ঞানীরা বলেন মেরুদন্ডী প্রাণীর মূল বৈশিষ্ট্য হলো এদের কঙ্কাল রয়েছে এবং এদের শরীরে রক্ত চলাচল করে। অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন রক্ত চলাচল করে না এজন্য পোকামাকড় এর শরীরে কোন রক্ত নেই। 

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে এবার চলুন আমরা দেখে আসি মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য গুলো কি কি। 

মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য গুলো কি কি

মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মূল পার্থক্য হল মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত সরবরাহ হয় এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন রক্তের সরবরাহ হয় না আর অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত থাকলেও এদের রক্তের রং লাল নয়। মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কঙ্কাল অথবা কশেরুকা বিদ্যমান রয়েছে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন কঙ্কাল বিদ্যমান নেই।

এই পৃথিবীতে দুই ধরনের প্রজাতি রয়েছে। সেই প্রজাতি হল মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণী জগতের মূল দুইটি শাখা হলো মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী। এই দুই শাঁখার মধ্যে বেশ কয়েকটি পার্থক্যও রয়েছে। নিচে দেখে নির মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্যগুলো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা রয়েছে।

পার্থক্য ১
মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে মেরুদন্ড রয়েছে। কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন মেরুদন্ড কিংবা কংকাল অথবা কশেরও নেই। মেরুদন্ডী প্রাণীর মূল বৈশিষ্ট্য হলো তাদের কঙ্কাল যা স্নায়ুতন্ত্রকে সুরক্ষা প্রদান করে।

পার্থক্য ২
মেরুদন্ডী প্রাণীদেহ দীপারষিক প্রতি সম্মত হয় এদের শরীরের মাছ বড় বড় সমান অংশে ভাগ করা যায় কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীর বিভিন্ন অংশে খন্ডিত থাকে। এবং অমেরুদণ্ডীর প্রতি সাম্য বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন একটি কেঁচোর দেহকে বিভিন্ন খন্ডে খন্ডে ভাগ করা যেতে পারে। 

পার্থক্য ৩ 
মেরুদন্ডী প্রাণী গুলোর স্নায়ু রজ্জু মেরুদন্ডের ভেতরেই থাকে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর স্নায়ুরজ্জু দেহের অঙ্কীয়দেশে এবং নিরেটে অবস্থিত থাকে মেরুদন্ডী প্রাণীর যুগ ফাঁপা হয় কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর স্নায়ুরজ্জু চুপসে থাকে।

পার্থক্য ৪  
মেরুদন্ডী প্রাণী গুলোর মস্তি কৌশু বিকশিত হয় এবং কলেটি দ্বারা সুরক্ষিত থাকে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর মস্তি থকলেও এদের মস্তিষ্ক অনেক ছোট এবং কোটি দ্বারা আবৃত করা সম্ভব হয় না। প্রতিটি মেরুদন্ডী প্রাণীর মস্তিষ্ক অনেক উন্নত মানের হয়। 

পার্থক্য ৫
প্রতিটি মেরুদন্ড প্রাণীর শরীরে কঙ্কাল রয়েছে এই কঙ্কাল অভ্যন্তরীণভাবে অস্থি এবং তরুণাস্থী দিয়ে তৈরি করা। কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর কোন কঙ্কাল নেই আর যদি কঙ্কাল থাকে তাহলে সেটি বহি কঙ্কাল হয় এবং ক্যালসিয়াম কার্বনেট এর মাধ্যমে তৈরি থাকে। 

পার্থক্য ৬
অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত থাকে না রক্ত থাকলেও সে রক্তে হিমোগ্লোবিন থাকেনা এর জন্য রক্তের রং সাদা কিংবা অন্য রঙের হতে পারে। কিছু কিছু অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে হিমোগ্লোবিন থাকলেও সেটি রক্ত রসের দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে।মেরুদন্ডী প্রাণীর রক্তে হিমোগ্লোবিন থাকে এবং লোহিত রক্ত কণিকার অভ্যন্তরে থাকে। মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মূল বৈশিষ্ট্য হলো মেরুদন্ডী প্রাণীদের রক্ত বিদ্যমান এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত বিদ্যমান থাকলেও সেই রক্তের হিমোগ্লোবিন থাকেনা। এই জন্য রক্তের রং লাল নয়। 

পার্থক্য ৭  
অমেরুদন্ডী প্রাণীরা ত্বক গিল কিংবা ট্রাকিয়া দিয়ে শ্বাস নিতে পারে কিন্তু ও মেরুদন্ডী প্রাণীরা সরাসরি ফুসফুস অথবা গিলের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস নাই। যেমন কেঁচো একটি অমেরুদন্ডী প্রাণী এবং কেঁচো ত্বকের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস নাই কিন্তু মানুষ এটি মেরুদন্ড প্রাণী এবং মানুষ ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে থাকে। 

পার্থক্য ৮  
মেরুদন্ডী প্রাণীদের হৃদপিণ্ড দেহের অভ্যন্তরে অঙ্কীয়দেশে অবস্থিত থাকে। আমরা স্বাধীনতা প্রত্যেকে জানি যে মানুষ কিংবা কোন প্রাণীর হৃদপিণ্ড শরীরের অভ্যন্তরে অঙ্কিওদেশে থাকে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর হৃদপিন্ড যদি থাকে তাহলে সেটি পৃষ্ঠদেশে অবস্থিত থাকে। অর্থাৎ অমেরুদন্ডী প্রাণী গুলোর পৃষ্ঠদেশে হৃৎপিণ্ড অবস্থান করে। 
পার্থক্য ৯ 
বিজ্ঞানীরা বলেন যে, মেরুদন্ডী প্রাণী ও মেরুদন্ডী প্রাণী তুলনায় শারীরিক এবং আচরণগত ভাবে বেশ জটিল। মেরুদন্ডী প্রাণীর আকার অমেরুদন্ডী প্রাণীর তুলনায় অনেক বড় হয় যেমন একটি কেঁচোর তুলনায় অবশ্যই মানুষের শরীরের আকারে বড়। 

পার্থক্য ১০
মানুষ ছাড়া প্রতিটি মেরুদন্ডী প্রাণীর পাখনা কিংবা পা থাকে। মেরুদন্ডী প্রাণীর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল মানুষ ছাড়া প্রায় সাব মেরুদন্ডী প্রাণীর লেজ থাকে। কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর কোন লেজ থাকে না। অমেরুদন্ড প্রাণীর পাকনা কিংবা পা থাকেনা। 

পার্থক্য ১১
মেরুদন্ডী শ্রেণীর কিছু প্রাণী, যেমন স্তন্যপায়ী সরীসৃপ উভচর মৎস্য,পক্ষী। অমেরুদন্ডী শ্রেণীর কিছু প্রাণী রয়েছে যাদেরকে খালি চোখে দেখা যায় না যেমন আমিবা। মেরুদন্ডী প্রতিটি প্রাণীকে খালি চোখে দেখা যায় এবং স্পষ্টভাবে দেখা যায়। মেরুদন্ডী প্রাণী গুলো অমেরুদন্ডী প্রাণীর তুলনায় আকারে এবং উচ্চতায় অনেক বড় হয়।

পার্থক্য ১২
অমেরুদন্ডী শ্রেণীর অধিকাংশ প্রাণীই পতঙ্গ শ্রেণীভুক্ত এবং এদের দেহ তিনটি অংশে বিভক্ত থাকে মস্তিষ্ক বক্ষ এবং উদার। মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীর মাঝ বরাবর দুই ভাগের সমান অংশে ভাগ করা যায়। 

পার্থক্য ১৩
প্রতিটি মেরুদন্ডী প্রাণীর দুইটি চোখ থাকে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণী গুলোর চোখ সরল প্রকৃতির হয় এবং একটি চোখের ভেতরে অনেকগুলো চোখ থাকে।

পার্থক্য ১৪
অমেরুদন্ডী প্রাণী স্থির অবস্থায় থাকতে ভালোবাসে এবং ঘিরে চলাচল করে কিন্তু মেরুদন্ড প্রাণীরা সবসময়ই সক্রিয়ভাবে বিচরণ করে এবং দ্রুতগতিতে চলাচল করে। 

পার্থক্য ১৫
অমেরুদন্ডী প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা মেরুদন্ডী প্রাণীর চেয়ে অনেক কম যেমন যে কোন মাছ কিংবা প্রাণীর বিভিন্ন ধরনের প্রজাতি থাকে মাছের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে যেমন রুই মাছ কাতলা মাছ পাঙ্গাস মাছ। কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা এই পৃথিবীতে খুবই কম। 

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য গুলো কি কি। আজকের এই পোস্টে আমরা মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে ১৫ টি পার্থক্য ব্যাখ্যা করলাম। আশা করছি আপনারা মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্যগুলো বুঝতে পেরেছেন। এবার চলুন আমরা দেখে আসি তিনটি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম। 

তিনটি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম

তিনটি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম কি? এই পৃথিবীতে কয়েক কোটি অমেরুদন্ড প্রাণী রয়েছে। ইতিমধ্যে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে মেরুদন্ডী প্রাণীর তুলনায় অমেরুদন্ডী প্রাণীর সংখ্যা এই পৃথিবীতে অনেক কম আজকের এই পোস্টটি আমরা জানবো তিনটি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নামগুলো।

১) পোকামাকড় যেমন: পিঁপড়া মাছি মশা মৌমাছি 
২) কৃমি, কেঁচো
৩) শামুক, মাকড়সা 
পিঁপড়া মাছি মৌমাছি এদের শরীরে কোন কঙ্কাল অথবা মেরুদন্ড নেই। এছাড়াও পোকামাকড়ের শরীর থেকে কোন রক্ত পাওয়া যায় না এদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিন থাকে না এজন্য পোকামাকড়কে বিজ্ঞানীরা অমেরুদন্ডী প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং কৃমি কেঁচো এদের শরীরের বিভিন্ন খণ্ডে খন্ডে বিভক্ত থাকে এবং এরা ত্বকের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে থাকে।

যা আমেরুদন্ডী প্রাণীর প্রধান বৈশিষ্ট্য। এইজন্য পিঁপড়া মাছি মৌমাছি কৃমি কেঁচো এদেরকে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলা হয়। এছাড়াও শামুক এবং মাদ্রাসা এদের শরীরেও কোন কঙ্কাল বিদ্যমান থাকে না এবং শামুক ও মাকড়সার শরীরের স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল প্রকৃতির হয়। এইজন্য এই তিনটি প্রাণীদের অমেরুদন্ডী প্রাণী বলা হয়। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন তিনটি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম সম্পর্কে এবার চলুন আমরা ছটফট দেখে আসি মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডীর ৫টি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।

মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডীর ৫টি বৈশিষ্ট্য 

মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডীর পাঁচটি বৈশিষ্ট্য কি? ইতিমধ্যেই আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এই পৃথিবীতে দুইটি শাখার প্রজাতি রয়েছে এক মেরুদন্ডী এবং দুই অমেরুদন্ডী। অমেরুদন্ডী এবং মেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় ওপরে আমরা দেখলাম মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীগুলোর মধ্যে ১৫ টি বৈশিষ্ট্য। ঝটপট মনে রাখার জন্য মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী ৫টি বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া রয়েছে দেখে নিন।

এদের মেরুদন্ড 

মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হল মেরুদন্ডী প্রাণীর মেরুদন্ড বিদ্যমান রয়েছে। মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কশেরুকা দিয়ে তৈরি একটি মেরুদন্ড থাকে। এটি স্নায়ুতন্ত্র কে রক্ষা করে এবং শরীরকে সহায়তা প্রদান করে। কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন মেরুদন্ড অথবা কশেরুকা বিদ্যমান নেই।। 

মস্তিষ্ক 

প্রতিটি মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে উন্নত মানের মস্তিষ্ক থাকে যা তাদেরকে সমাজে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে এবং জটিল আচরণ এবং সাধারণ আচরণ শেখায়। কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীগুলোর মধ্যে তুলনামূলক কম উন্নতমান মস্তিষ্ক থাকে।

শ্বাস প্রশ্বাস 

অধিকাংশ মেরুদন্ডী প্রাণী ফুসফুস অথবা গিল এর মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ে থাকে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীগুলো ত্বক এর মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়। যেমন কেঁচো ত্বকের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে কিন্তু মানুষ ফুসফুসের মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাস নাই এজন্য মানুষকে বিজ্ঞানীরা মেরুদন্ডী প্রাণী হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং কেচকে অমেরুদন্ডী প্রাণী। 

রক্ত চলাচল 

মেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত চলাচল করে এদের রক্ত থেকে হিমোগ্লোবিন রয়েছে এবং লোহিত রক্তকণিকা বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন লোহিত রক্তকণিকা কিংবা হিমোগ্লোবিন নেই এজন্য এদের শরীরে রক্ত সরবরাহ হয় না। এছাড়াও মেরুদন্ডী প্রাণীগুলো হৃদপিণ্ড অঙ্কিওদেশে অবস্থান করে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর হৃদপিণ্ড পৃষ্ঠদেশে অবস্থান করে। 

আকার ওজন

প্রতিটি অমেরুদন্ডী প্রাণীর মেরুদন্ডী প্রাণীর তুলনায় আকারে অনেক ছোট হয় যেমন পিঁপড়া পোকামাকড় মশা এগুলো প্রাণী অথবা মানুষের তুলনায় ছোট  আকৃতির। এই পৃথিবীতে মেরুদন্ডী প্রাণী তুলনায় অমেরুদন্ডী প্রাণীর সংখ্যা খুবই কম। অমেরুদন্ডী প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যাও খুব কম। 

প্রতিটি মেরুদন্ডী প্রাণীর দুইটি চোখ রয়েছে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর চোখ সরল প্রকৃতির হয় এবং একটি চোখের মধ্যে অনেকগুলো চোখ থাকে। অমেরুদন্ডী এবং মেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যটি প্রধান।

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য গুলো কি কি আজকের এই পোস্টে আমরা মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু বিশ্লেষণ করলাম। এবার চলুন আমরা দেখে আসি অমেরুদন্ডী প্রাণীর ৫টি বৈশিষ্ট্য। 

অমেরুদন্ডী প্রাণীর ৫টি বৈশিষ্ট্য 

আপনি কি অমেরুদন্ডী প্রাণীর পাঁচটি বৈশিষ্ট্য করছেন তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গাতে এসেছেন আজকের এই পোস্টে আমরা অমেরুদন্ডী এবং মেরুদন্ডী প্রাণী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব এদের মেরুদন্ডের অনুপস্থিত এবং বহিকঙ্কাল রয়েছে। মেরুদন্ডী প্রাণীর কঙ্কাল অভ্যন্তরে থাকে এবং পৃষ্ঠদেশে অবস্থান করে কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর বহি কঙ্কাল বিদ্যমান থাকে।। 

বিভিন্ন দেহের গঠন 

অমেরুদন্ডী প্রাণীর দেহের আকার এবং গঠন অনেক বৈচিত্রময় হয়ে থাকে এদের কিছু প্রাণী দেহ নরম আকৃতির হয় আবার কিছু প্রাণীদেহ খলক যুক্ত হয়। যেমন অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে রয়েছে পোকামাকড় পোকামাকড়ের শরীর তুলনামূলক অনেক নরম হয় আবার অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে আরও একটি প্রাণে রয়েছে শামুক যার শরীরের উপরের বহির্বিভাগ অংশে খোলক রয়েছে এই খোলকের মধ্যে তারা অবস্থান করে।

রক্তের সরবরাহ 

অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন রক্তের সরবরাহ করে না। অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত থাকলেও রাতে হিমোগ্লোবিন থাকেনা যার কারণে রক্তের রং সাদা থাকে। বেশিরভাগ অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন রক্ত থাকে না।

মেরুদন্ডের অনুপস্থিতি 

অমেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে কোন মেরুদন্ড থাকেনা এটি হল তাদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য। মেরুদন্ডী প্রাণীদের শরীরে একটি সুতার মতো শক্ত অংশ থাকে যা তাদের শরীরকে সহায়তা প্রদান করে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সুরক্ষা দেয় । কিন্তু অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে এমন কোন সুতার মত শক্ত অংশ উপস্থিত নেই। 

শ্বাস প্রশ্বাস

অমেরুদন্ডী প্রাণীরা ত্বক অথবা গিল এর মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাস নেয়। এদের হৃদপিণ্ড পৃষ্ঠদেশে অবস্থান করে। সাধারণ মেরুদন্ডী প্রাণীদের হৃদপিণ্ড যেমন শরীরের অভ্যন্তরে অঙ্কীয় দেশে অবস্থান করে অমেরুদন্ডী প্রাণীর ক্ষেত্রে হৃদপিন্ডের অবস্থান সম্পন্ন উল্টোদিকে। 

প্রজনন প্রক্রিয়া 

অমেরুদন্ড প্রাণীদের প্রজনন পদ্ধতি ও বিদ্যমান রয়েছে। কিছু প্রাণী ডিম দেয় আবার কিছু প্রাণী বাচ্চা দিতে সক্ষম।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন অমেরুদন্ডী প্রাণীর পাঁচটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এই বৈশিষ্ট্য গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পাঁচটি বৈশিষ্ট্য অমেরুদন্ডী প্রাণীর পরিচয় বহন করে। আশা করছি আজকের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনারা অমেরুদন্ডী এবং মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

উপসংহার : মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত 

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের এই প্রতিবেদনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা। অনেকে কমেন্ট বক্সে জিজ্ঞাসা করেন যে মেরুদন্ডী এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য গুলো কি কি অমেরুদন্ডী এবং মেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান পার্থক্য হলো মেরুদন্ডী প্রাণীর মেরুদন্ড রয়েছে এবং অমেরুদন্ডী প্রাণীর কোন মেরুদন্ড নেই।

অমেরুদন্ডী প্রাণীর শরীরে কোন কোশেরুকা বিদ্যমান নেই এবং এদের শরীরে রক্ত চলাচল হয় না। এইজন্য পোকামাকড় কিংবা মশা এর শরীরে কোন রক্ত থাকে না। মশা এবং পোকামাকড় ছাড়া আরও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণে রয়েছে যাদেরকে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলা হয় যেমন কৃমি কেঁচো। কেঁচো তাদের ত্বকে যে ছিদ্র অংশ রয়েছে সেই ছিদ্র অংশের মাধ্যমে এরা শ্বাস প্রশ্বাস নেই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url