অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন

অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন? জানতে আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ দেখতে থাকুন আজকের এই প্রতিবেদনে সমাজবিজ্ঞানের জনক কে বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে এবং আধুনিক সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে সে সমস্ত বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন
আপনারা যারা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেরি না করে আমরা ঝটপট দেখে আসি অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন? বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে এবং আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের জনক কে। 

সমাজবিজ্ঞানের জনক কে

আপনারা অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন যে সমাজবিজ্ঞানের জনক কে? সমাজবিজ্ঞানের জনক হল অগাস্ট কোঁৎ । অগাস্ট কোঁৎকে সমাজ বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। অগাস্ট কোঁৎ ছিলেন একজন ফরাসি দার্শনিক এবং  সমাজবিজ্ঞানের প্রবর্তক। অগাস্ট কোঁৎ প্রথম সমাজ বিজ্ঞানের সঠিক ধারণা প্রদান করেন এই জন্য সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে অগাস্ট কোঁৎকে মানা হয়।

অগাস্ট কোঁৎ প্রথম সমাজবিজ্ঞানের শাস্ত্রীয় ভীতি স্থাপন করেছিলেন। তার চিন্তাধারা সমাজবিজ্ঞানের কাঠামো তৈরি করতে সাহায্য করে। তিনি সমাজের পরিবর্তন এবং গতিশীলতা সম্পর্কে আরও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি সমূহ গ্রহণ করেন তার তত্ত্বাবধানে সমাজবিজ্ঞানের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ এবং জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। 

বর্তমান সময়ে সমাজবিজ্ঞান একটি স্বাধীন এবং স্বীকৃত বিদ্যা হিসেবে পরিচিত। যা শুধুমাত্র অগাস্ট কোঁৎ এর জন্য সম্ভব হয়েছে এজন্য অগাস্ট কোঁৎকে (Auguste Comt) সমাজ বিজ্ঞানের জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

সুপ্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন সমাজবিজ্ঞানের জনক কে। সমাজবিজ্ঞানের স্বীকৃত এবং গ্রহণযোগ্য জনক হল অগাস্ট কোঁৎ । তিনি প্রথম সমাজ বিজ্ঞানের ধারণা এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকের সামনে তুলে ধরেছিলেন। এইজন্য অগাস্ট কোঁৎকে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। 

অগাস্ট কোঁৎ এর জীবনী 

অগাস্ট কোঁৎ এর জীবনী সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গাতে এসেছেন তিনি ছিলেন ফ্রান্সের প্যারিস সহজে একজন চিন্তাবিদ। দার্শনিক এবং সমাজবিজ্ঞানের প্রবর্তক হিসেবেও তার বহু পরিচিত ছিল। তিনি ১৭৯৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৫৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ফ্রান্সের নাগরিক ছিলেন। এইজন্য অগাস্ট কোঁৎকে ফরাসি দার্শনিক বলা হয়। 

অগাস্ট কোঁৎ সমাজে শিক্ষার রাজনীতি এবং ধর্ম ও অর্থনীতি বিষয় নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন। এবং তিনি বুঝতে পারেন যে সমাজবিজ্ঞানের সাথে শিক্ষা রাজনীতি ধর্ম এবং অর্থনীতি সংযুক্ত রয়েছে। ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে অগাস্ট কোঁৎ সমাজবিজ্ঞানের মূল নীতি তৈরি করতে শুরু করে এবং পরবর্তীতে পজিটিভিজম নামে পরিচিতি পায়।

অগাস্ট কোঁৎ এর প্রাথমিক জীবন শুরু হয়েছিল ফ্রান্সের মনপোলিয়ার শহরে তার পিতা ছিলেন একজন মধ্যবিত্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা।অগাস্ট কোঁৎ ছোটবেলা থেকে প্রচুর মেধাবী ছিলেন তার মেধার কারণে সে আজ সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পেরেছে। ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্যারিসের জনপ্রিয় একটি স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে তার প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু হয়। 

অগাস্ট কোঁৎ অন্যান্য সাবজেক্ট এর তুলনায় প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে গভীরভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং তিনি বিজ্ঞানের প্রতি মূলদৃষ্টি আরোপ করেন। তার শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করা। অগাস্ট কোঁৎ এর শৈশবকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যায় জড়িত ছিল।

এই সময় আশেপাশের রাজনৈতিক সমস্যা তাকে এই সব বিষয়ে আগ্রহী গড়ে তুলতে আরো সাহায্য করে। প্যারিসে পড়াশোনার পরে তিনি ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে এফেক্টিভ এবং একাডেমিতে কাজ শুরু করেন। তার চিন্তাধারা তার জীবনের বড় একটি অংশকে জুড়ে ছিল। তিনি সবসময় প্রাকৃতিক বিজ্ঞান নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন এই জন্য তার এই চিন্তা ভাবনা থেকে একটি নতুন তত্বের আবিষ্কার করেন তার নাম ছিল পজিটিভিজম। 

পজিটিভিজম হল দার্শনিক তত্ত্ব। তিনি বিশ্বাস করতেন যে পৃথিবীর সবকিছু এবং প্রাকৃতিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বুঝে নেওয়া সম্ভব তিনি সমাজকে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জীবন্ত সত্তা হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। তার মতে যে কোন সমস্যা এবং প্রত্যেকটি ঘটনা বৈজ্ঞানিক বিচার বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। 

এই ছিল অগাস্ট কোঁৎ এর জীবনী তিনি মূলত ছোট থেকে মেধাবী ছিলেন এবং তার মূল দৃষ্টি এবং গুরুত্ব ছিল শিক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞান আরো সহজ ভাবে জানা। তার এই চিন্তাভাবনার কারণে তিনি আজ সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। এবার চলুন দেখে আসি সমাজবিজ্ঞানের জনক অগাস্ট কোঁৎ এর ৩ স্তরের তত্ত্ব 

সমাজবিজ্ঞানের জনক অগাস্ট কোঁৎ এর ৩ স্তরের তত্ত্ব 

সমাজবিজ্ঞানের জনক অগাস্ট কোঁৎ এর ৩ স্তরের তত্ত্ব খুঁজছেন তাহলে আপনার খোঁজাখুঁজি এখানেই শেষ হচ্ছে আজকের এই পোষ্ট থেকে সমাজবিজ্ঞানের জনক এবং অগাস্ট কোঁৎ সম্পর্কে সবকিছু বিস্তারিত জানতে পারবেন তাই গুরুত্বসহ এই পোস্টটি সম্পূর্ণ দেখতে থাকুন। 

অগাস্ট কোঁৎ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব ছিল সেই তত্ত্বের নাম হলো ''তিন স্তরের তত্ত্ব''। এই তথ্যের মাধ্যমে তিনি সমাজবিজ্ঞানের চিন্তাভাবনা এবং উন্নতির প্রক্রিয়াগুলো সবকিছু ব্যাখ্যা করেন। তার মতে বিজ্ঞানটি ব্যবহার করে মানুষের মানুষের জীবনধারাকে আরও উন্নত করা সম্ভব। তার মতে মানুষের চিন্তা ভাবনার ইতিহাসকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করা যায় এই জন্য এই তত্ত্বের নাম দেন তিনটি স্তরের তত্ত্ব। নিচে সেই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করার হলো:

থিওলজিক্যাল স্টেজ : অগাস্ট কোঁৎ এর প্রথম স্তরে মানুষ ঈশ্বর আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে এই পৃথিবী ও প্রাকৃতিক ঘটনাসমূহে ব্যাখ্যা করত । মানুষ আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী ছিলেন বলে দাবি করেন অগাস্ট কোঁৎ।

মেটাফিজিক্যাল স্টেজ: তিনটি স্তরের তত্ত্বতে দ্বিতীয় স্তরে মানুষ বিমূর্ত ধারণা অথবা দর্শন দ্বারা এই প্রাকৃতিক ও সামাজিক ঘটনাসমূহ কে ব্যাখ্যা করতে শুরু করে। তারা মনে করেন মানুষের বিমূর্ত ধারণা সমূহকে এবং সমস্যা মোকাবিলা করতে দর্শন যথেষ্ট। 

পজিটিভ স্টেজ: সর্বশেষ স্তরে মানুষ সমাজের ঘটনা এবং প্রাকৃতিক ঘটনাসমূহ কে বৈজ্ঞানিকভাবে পরিমাপযোগ্য ও পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্লেষণ করতে শুরু করে। অর্থাৎ সমাজ অথবা মানুষের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সামাজিক ঘটনাসমূহ কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করা শুরু করে। 

অগাস্ট কোঁৎ এর তিনটি স্তরের তত্ত্বতে সর্বশেষ স্তরটি সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য অর্থাৎ মানুষের বিভিন্ন আচার-আচরণ সমস্যা এবং ঘটনা সমূহকে বৈজ্ঞানিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করা। সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন সমাজবিজ্ঞানের জনক অগাস্ট কোঁৎ এর ৩ স্তরের তত্ত্ব সম্পর্কে এই তিন স্তরের তত্ত্বতে তিনটি স্তর ব্যাখ্যা করা রয়েছে এবং সেই ব্যাখ্যাগুলো অধিক গ্রহণযোগ্য। এবার চলুন আমরা ঝটপট দেখে আসি অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন?

অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন
আপনি কি জানেন অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন? অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজ বিজ্ঞানের জনক বলা হয় তার অবদান এবং তার বৈশিষ্ট্য সমূহের কারণে তিনি সমাজবিজ্ঞানের একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তিনি ছিলেন আধুনিক বিজ্ঞানের পথপ্রদর্শক। 

অগাস্ট কোঁৎ ফরাসি দার্শনিক তিনি ছোট থেকেই প্রচুর মেধাবী ছিলেন এবং বিজ্ঞানের প্রতি তার আলাদা একটি আগ্রহ ছিল। তার আগ্রহ এবং চিন্তাধারার কারণে তিনি আজ সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পেরেছেন। অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলার ১৫ টি কারণ সমূহ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো। 

সমাজবিজ্ঞানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি 

অগাস্ট কোঁৎ  সমাজবিজ্ঞানের গবেষণাতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাজে লাগান এবং তিনি এটি বিশেষ করেন যে মানুষের, সমাজের এবং প্রাকৃতিক বিভিন্ন ঘটনাবলীকে বিজ্ঞানের সাহায্যে বিচার বিশ্লেষণ করা সম্ভব এবং বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নির্ণয় করা সম্ভব। 

সমাজের উন্নয়ন এবং অগ্রগতি 

অগাস্ট কোঁৎ এর কারণে সমাজবিজ্ঞান নামে একটি স্বীকৃত এবং স্বাধীন বিদ্যা সচল হয়েছে তিনি এটি বিশ্বাস করতেন যে বৈজ্ঞানিক চিন্তা ধারণা এবং যুক্তি মাধ্যমে সমাজের অগ্রগতি করা সম্ভব। সমাজের উন্নতি তখনই হবে যখন মানুষ তার চিন্তা এবং জ্ঞানকে আরো উন্নত করবে। সমাজবিজ্ঞান সমাজের অগ্রগতি এবং উন্নয়নের জন্য দায়ী। 

সমাজ বিজ্ঞানের তিন স্তরের তথ্য 

অগাস্ট কোঁৎ সমাজ বিজ্ঞানের তিন স্তরের তথ্য ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং তার প্রথম তথ্য ছিল থিওলজিক্যাল, দ্বিতীয় তত্ত্ব মেটাফিজিক্যাল এবং তৃতীয় তত্ত্ব হলো পজেটিভ স্টেজ। তার এই তিনটি তথ্য সমাজের ইতিহাসকে আরো বিকশিত করতে সাহায্য করে এবং সমাজের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া গুলো ধীরেধীরে ব্যাখ্যা করে। কিভাবে সমাজ এবং প্রাকৃতিক ঘটনা সমূহকে বিজ্ঞানের মাধ্যমে বিচার বিশ্লেষণ করা যায়? সেই সমস্ত উপায় গুলো ব্যাখ্যা করে।

ধর্ম নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি 

অগাস্ট কোঁৎ ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমাজের পরিবর্তন এবং সমাজের ঘটনা সমূহকে বিচার বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করে না বরং তিনি বৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবসম্মত উপায় গুলোকে অবলম্বন করেন এবং বৈজ্ঞানিক উপায় গুলোর মাধ্যমে সমাজ ও প্রাকৃতিক ঘটনা বলীকে বিচার বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন। 

সমাজবিজ্ঞানের জন্য পদ্ধতিগত কাঠামো 

অগাস্ট কোঁৎ প্রথম সমাজবিজ্ঞানের জন্য পদ্ধতিগত কাঠামোর তৈরি করেন যার মাধ্যমে সমাজবিজ্ঞানের শাখা গুলোকে গবেষণা করা সম্ভব হয়। তার এই অবদানগুলোর কারণে তাকে সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।

প্রাকৃতিক এবং সামাজিক আইনগুলির সম্পর্ক 

অগাস্ট কোঁৎ বিশ্বাস করতেন এই সমাজে যেমন প্রাকৃতিক আইন কাজ করে ঠিক একইভাবে সামাজিক আচরণ ও প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আইন একইভাবে কাজ করবে। তার এই চিন্তা ধারা সমাজবিজ্ঞানের নতুন পরিবর্তন নিয়ে আসে। 

দ্বন্দ্বের পরিবর্তে একীকরণ 

সমাজে নানান সমস্যা এবং জটিলতার কারণে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অগাস্ট কোঁৎ সামাজিক দ্বন্দ্ব এবং অস্থিরতাকে দূর করে কিভাবে ঐক্য এবং সামঞ্জস্য তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে গবেষণা করেন তিনি সমাজের ন্যায় এবং সুষ্ঠু বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে ব্যবহার করেন। 

দর্শন এবং বিজ্ঞান একত্রিত করা 

অগাস্ট কোঁৎ বিজ্ঞান এবং দর্শনকে একত্রিত করে এবং সমাজবিজ্ঞানে নতুন একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেন। তিনি সমাজের এবং প্রকৃতির বিভিন্ন কারণ ও ঘটনাসমূহ কে দর্শন এবং বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে বিচার বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন এবং বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা প্রত্যেকের মাঝে তুলে ধরেন। 

সমাজবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠা 

অগাস্ট কোঁৎ প্রথম সমাজ বিজ্ঞানকে পৃথক পৃথক শাখায় আলোচনা করেন তিনি সমাজ বিজ্ঞানকে স্বাধীন এবং স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে হিসেবে চিন্তা করেন তার এই অবদানের কারণে আজ সমাজবিজ্ঞান নামে একটি বিদ্যা রয়েছে। এবং এই বিদ্যাটি সম্পন্ন স্বাধীন ও স্বীকৃত এজন্য অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়।

সমাজবিজ্ঞানে শিক্ষার ভূমিকা 

অগাস্ট কোঁৎ তিনি প্রথম সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষা এবং গবেষণার গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করেন এবং সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষা ও গবেষণার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন তার মতে মানুষের জীবনযাত্রাকে উন্নত করার জন্য সমাজবিজ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে। 

মানব সমাজের শৃঙ্খলা এবং শান্তির দিকে মনোযোগ 

অগাস্ট কোঁৎ এটি বিশ্বাস করতেন যে সমাজে শান্তি এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সমাজবিজ্ঞানের ভূমিকা রয়েছে। তিনি সামাজিক শৃঙ্খলা এবং শান্তির ওপর কঠর ভাবে জোড় প্রদান করেছিলেন এবং বৈজ্ঞানিকভাবে সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা কে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। এই জন্য প্রত্যেকের মাঝে সমাজবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা কে তুলে ধরেন।

সমাজ বিজ্ঞানের অনুপ্রেরণা এবং ভবিষ্যৎ পথপ্রদর্শক 

অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের অনুপ্রেরণা এবং ভবিষ্যৎ পথপ্রদর্শক বলা হয় কারণ তিনি সমাজবিজ্ঞানের অনুপ্রেরণা যোগায়। তার অবদানে সমাজবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এইজন্য  সমাজবিজ্ঞানের পথপ্রদর্শক হিসেবে তাকে চিরকাল স্মরণ করা হবে। তার গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের শান্তি এবং শৃঙ্খলা বিস্তার করা সমাজের ভবিষ্যতকে পরিবর্তন করা এবং উন্নতি সাধন করা। 

নির্দিষ্ট ধর্মীয় বিশ্বাস এর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে না 

অগাস্ট কোঁৎ কোন নির্দিষ্ট ধর্মকে কেন্দ্র করে বিশ্বাসের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেনি বরং তিনি বৈজ্ঞানিক এবং যুক্তি-প্রযুক্ত চিন্তা ধারণার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রকৃতির বিভিন্ন কারণ ও ঘটনা সমূহ কে বৈজ্ঞানিক এবং যুক্তিপূর্ণ চিন্তাধারার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতেন। সমাজবিজ্ঞানের ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করতে তিনি প্রথম সাহায্য প্রদান করেন এবং তার অবদানে সমাজবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হয়। 

সমাজের পরিবর্তনের কারণসমূহ ব্যাখ্যা 

অগাস্ট কোঁৎ সমাজে প্রতিটি মুহূর্তে কি কি পরিবর্তন ঘটেছে এবং সেই পরিবর্তন সমূহের কারণ গুলো কি কি সে সমস্ত বিষয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে এবং যুক্তিযুক্ত ভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তিনি পরিবর্তনের কারণ এবং প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করার জন্য বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক উপায় সম্পর্কে অবলম্বন করেন পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞানে একটি শক্তিশালী গবেষণা ক্ষেত্রে তৈরি করেন যা সমাজবিজ্ঞানকে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। 

মানুষের প্রাকৃতিক অধিকার এবং স্বাধীনতা 

অগাস্ট কোঁৎ মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার গুরুত্বকে সমাজে তুলে ধরেন এবং তিনি বিশ্বাস করেন সমাজের উন্নতি তখনই সম্ভব হবে যখন মানুষ তার মৌলিক অধিকার লাভ করবে। এই সমাজকে উন্নত করার জন্য মানুষের ভূমিকা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। 

ওপরের এই কারণসমূহের কারণে অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজ বিজ্ঞানের জনক বলা হয় তিনি সমাজের প্রতিটি দিককে বৈজ্ঞানিকভাবে পৃথক পৃথকভাবে ব্যাখ্যা করেন এবং প্রত্যেককে সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করেন তিনি সমাজবিজ্ঞানের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এইজন্য অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজ বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। 

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন? উপরের এই ১৫ টি কারণের জন্য অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তিনি সামাজিক এবং প্রাকৃতিক ঘটনার সমূহকে সমাজবিজ্ঞানের মাধ্যমে পৃথক পৃথকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন এবং সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আর এই অবদানের কারণে তিনি আজ সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পেরেছেন। 

আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের জনক কে 

আপনি কি জানেন আধুনিক সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে? আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় এমিল দুর্কেইম কে। Emile Durkheim হলো আধুনিক সমাজ বিজ্ঞানের জনক তিনি একজন ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী। সমাজবিজ্ঞানের শাখাকে একটি বৈজ্ঞানিক এবং তাত্ত্বিক ভিত্তি প্রদান করেন Emile Durkheim। তার এই অবদানের কারণে তাকে আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তার অবদানে সমাজবিজ্ঞান একটি স্বতন্ত্র এবং প্রতিষ্ঠিত বিদ্যা শাখায় পরিণত হয়েছে। 

Emile Durkheim সমাজবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কে প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে তিনি সামাজিক পদার্থবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠা করে তিনি সমাজবিজ্ঞানের সাথে পদার্থ বিজ্ঞানের সম্পর্ককে পৃথক পৃথকভাবে বিচার বিশ্লেষণ করেন এবং সামাজিক বিভিন্ন উপাদান সমূহ যেমন প্রতিষ্ঠান সংস্কৃতি আচার-আচরণ কে বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন। তার গবেষণা ছিল শুধুমাত্র সমাজের কাঠামো ও তার কার্যকারিতা সম্পর্কে।

Emile Durkheim স্বাধীন সমাজবিজ্ঞানে তত্ত্বকে প্রকাশ করেন। তিনি প্রথম ব্যাক্তি যে এই স্বাধীন বৈজ্ঞানিক শাখা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।Emile Durkheim এর তত্ত্ব প্রদান করার আগে সমাজবিজ্ঞানকে এক ধরনের দর্শন হিসেবে মানা হতো কিন্তু তিনি সমাজকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে দেখার জন্য প্রত্যেকের মাঝে আগ্রহ তৈরি করেন যা পরবর্তীতে আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য।

Emile Durkheim সামাজিক কার্যকারিতা তথ্য প্রকাশ করে তিনি social facts ধারণাটি প্রথম প্রবর্তন করেন যার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন উপাদান সংস্কৃতি প্রথা আইন এবং আচরণ কে বিশ্লেষণ করা যায়। মূলত তার এই অবদান গুলোর কারণে Emile Durkheim কে আধুনিক সমাজ বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন আধুনিক সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে, আধুনিক সমাজ বিজ্ঞানের জনক হল Emile Durkheim। এবার চোদোন ঝটপট দেখে আসি বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে? 

বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে? 

আপনি কি জানেন বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে? অনেকে জিজ্ঞাসা করেন যে বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে? বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ তিনি বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, ভাষাতত্ত্ব এবং সংস্কৃতি সহ আরো অন্যান্য মানবিক বিষয়ক গবেষণায় বেশ গুরুত্ব অবদান লিখেছেন।

ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন ঢাকা জেলার বিক্রমপুর উপজেলার মুসলিম পরিবারের সন্তান তিনি ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি পরবর্তীতে সেখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।। তিনি ছাত্র জীবন থেকে মেধাবী স্টুডেন্ট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক হিসেবে সমাজবিজ্ঞান সংস্কৃতি এবং সাহিত্যসহ আর নানান বিষয়ে গবেষণা করেন। 

তার এই অসীম অবদানের কারণে বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ কে। সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে এবং কেন। এবার চলুন দেখে আসিস সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক কে। 

সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক কে 

অনেকে জিজ্ঞাসা করেন যে সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক কে সমাজবিজ্ঞানের বেশ কয়েকটি জনক রয়েছে যেমন আধুনিক জনক সমাজবিজ্ঞানের জনক এবং সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক। সমাজবিজ্ঞানের আদি-জনক বলতে বোঝায় যে সর্বপ্রথম সমাজবিজ্ঞানকে প্রতিষ্ঠা দেন একটি পরিচয় প্রদান করেন। সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক হলেন অগাস্ট কোঁৎ ।

অগাস্ট কোঁৎ প্রথম ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন তিনি ছিলেন একজন ফরাসি দার্শনিক। অগাস্ট কোঁৎ অবদান অনেক তিনি সমাজ বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠা করেন। তার অবদানে সমাজবিজ্ঞান স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি সমাজবিজ্ঞানের প্রথম মৌলিক ভিত্তিকে স্থাপন করেন যা পরবর্তীতে সমস্ত পৃথিবীর জুড়ে সমাজবিজ্ঞানী এবং গবেষকদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। 

অগাস্ট কোঁৎ সমাজবিজ্ঞানের জন্মদাতা হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন কারণ তিনি প্রথম সমাজের এই বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক দৃশ্য আলোচনা করেন এবং সমাজ ও প্রাকৃতিক বিভিন্ন ঘটনাবলী কে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে বিচার-বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্ব মানুষের মধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক কে সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক এবং জনক বলা হয় অগাস্ট কোঁৎ  কে। অগাস্ট কোঁৎ তিনি প্রথম সমাজবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠা করেন এবং সমাজবিজ্ঞান এর গুরুত্ব প্রত্যেকের মাঝে তুলে ধরেন। 

লেখক এর শেষ মন্তব্য 

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন সমাজবিজ্ঞানের জনক কে, বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানের জনক কে, আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের জনক কে, সমাজবিজ্ঞানের আদি জনক কে এবং অগাস্ট কোঁৎ কে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন?

আজকের এই পোস্টে সমাজবিজ্ঞানের জনক সম্পর্কে সবকিছু বিস্তারিত আলোচনা করলাম সমাজবিজ্ঞানের জনক হল অগাস্ট কোঁৎ । তিনি প্রথম সমাজ বিজ্ঞানের ধারণা ব্যাখ্যা করেন এর জন্য তাকে সমাজবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা অথবা জনক বলা হয়। 

অগাস্ট কোঁৎ প্রথম থেকেই তিনি সমাজবিজ্ঞানের প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী ছিলেন এবং তিনি শিশুকাল থেকেই অনেক বেশি মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পেরেছিলেন। ধীরে ধীরে তার এই মেধাকে এবং সমাজবিজ্ঞানের প্রতি তার আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে তিনি সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে আরো বেশি চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করেন।

এবং সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্ব সমাজে তুলে ধরেন। সমাজের বিভিন্ন সমস্যা এবং ঘটনাবলীকে বিজ্ঞানিকভাবে পর্যালোচনা করেন এবং সেই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করেন তিনি ধীরে ধীরে সমাজবিজ্ঞানকে বিদ্যায় রূপদান করেন এই জন্য তাকে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় অর্থাৎ সমাজবিজ্ঞানের জনক হল অগাস্ট কোঁৎ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url