১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন এর গুরুত্ব সকল শ্রেণীর জন্য

আপনি কি ১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব সকল শ্রেণীর জন্য জানতে চান? যারা ১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চান তারা নিচে দেখেন এই আর্টিকেলে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন এর গুরুত্ব

চলুন দ্রুত দেখে আসি ১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন এর গুরুত্ব এবং ১৯৭১ এ ভাষা আন্দোলন কেনো হয়েছিল।

১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন এর গুরুত্ব সকল শ্রেণীর জন্য

১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। এই পড়াটি আপনারা সকল শ্রেণীর জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। আমরা ফাইভ সিক্স ক্লাস থেকে এই ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে পড়ে আছে কারণ এটি আমাদের দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস যা আমাদের প্রত্যেককে জানতে হবে। 

বাংলাদেশের পাতায় লেখা প্রতিটি ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় এবং সবচেয়ে সেরা একটি ইতিহাস হল এই 1971 এর ভাষা আন্দোলন। কচি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব বাংলার ভাষা এবং সাংস্কৃতিকে সমূলে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল।

তাই তারা 1947 সালের শুরু হওয়া এই ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। কারণ বাঙালিরা বুঝে গেছিল যদি তারা এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করে যদি তারা এ ভাষা নিয়ে লড়াই না করে তাহলে তারা বাঙ্গালীদের মুখের ভাষাও এবার কেড়ে নিতে চলেছে। 

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর পূর্ব পাকিস্তানের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন নিপীড়ন এবং বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন তারা প্রতিটি পদে পদে পুরো পাকিস্তানকে শোষণ করেছে তারা অর্থনৈতিকভাবে রাজনৈতিকভাবে এবং সামাজিকভাবে 

পূর্ব পাকিস্তানের উপর বিভিন্ন বৈষম্য মূলক আচরণ করেছেন। মাত্র দশ বছরের ব্যবধানের মধ্যে পূর্ব বাংলার মানুষরা সবদিক থেকে শোষিত হচ্ছিল তারা আয় করছিল কিন্তু সেই আইয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ অর্থই চলে যাচ্ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের সেসময় পুরো পাকিস্তানের ছিল না।

কোন ধরনের ব্যাংক প্রতিষ্ঠান কিংবা কোনো ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেই সময় শুধুমাত্র উন্নতি হচ্ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের মাত্র ১০ বছরের মধ্যে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষরা উন্নত শি করে পৌঁছে গেছিল আর অপরদিকে পূর্ব বাংলার মানুষের সবদিক থেকে বৈষম্য এবং অন্যায়ের শিকার হচ্ছিল। 

তারপর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর মেইন টার্গেট হয়ে দাঁড়ায় এই ভাষা তারা চেয়েছিল বাঙালির মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে পাকিস্তানের উর্দু ভাষাকে বাংলায় প্রতিষ্ঠা করার কিন্তু এত সহজে বাঙালি পিছিয়ে পড়ার মানুষ নয় তারা নিজের ভাষার জন্য জীবন দিয়ে লড়াই করেছেন 

এবং নিজেদের ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে পেয়েছেন বাংলা হল আমাদের মাতৃভাষা জানি আমাদের গৌরব করা উচিত। এই বিশ্বে বাঙালির এই প্রথম এমন ইতিহাস তৈরি করেছেন ভাষার জন্য নিজেদের রক্ত ঝরিয়েছেন। 

বাংলার ইতিহাসে এই আন্দোলনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য কারণ পাকিস্তান শাসন শোষণের বিরুদ্ধে এটাই ছিল বাঙালি জাতির প্রথম বিদ্রোহ এবং এর মাধ্যমে বাঙালি জাতির জাতীয়তাবাদের প্রকাশ পায়। নিচে দেখুন ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব দেওয়া হল। 

১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন এর গুরুত্ব সকল শ্রেণীর জন্য

জাতীয়তা বোধের উত্থান 

এই আন্দোলন পূর্ব বাংলার অধিবাসীদের মধ্যে নব জাতীয়তাবাদের জাগরণ ঘটায় এবং অধিকার বঞ্চিত সেই বাঙালি জাতির মনে সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সাধিকার অর্জনের আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে।।

জনগণের ঐক্যবদ্ধতা 

১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশে বুদ্ধিজীবীদেরকে জনগণের সাথে একতা করে তোলে এবং সমগ্র জাতিকে সংগ্রামী চেতনায় উদ্যোক্ত করে তোলে। এই ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতিরা তারা ঐক্যবদ্ধতা শিখেছিল তারা একে অপরের সাথে একসাথে মিলেমিশে চলাফেরা শিখেছিল। 

অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন 

এই আন্দোলনে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন ছিল এতে পূর্ব বাংলার হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায় তারা প্রতিটি ধর্মের ব্যাক্তিরা একত্রিত হয়ে এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং নিজের ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করেন। যখন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন উর্দুই হবে একমাত্র পূর্ব বাংলার রাষ্ট্রভাষা তখন তারা হিন্দু এবং মুসলিম একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করেন এবং বলেন তারা তাদের মাতৃভাষাকে ছাড়বে না।

গণদাবিতে পরিণত করণ 

এই আন্দোলনে সর্বপ্রথম রক্তের বিনিময়ে জাতীয়তাবাদী আদায়ের শিক্ষা এবং প্রেরণার দান করেন এই দৃষ্টান্তই হতেই হিহিহি বাঙালি তাদের আত্ম নিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার মত দুর্জয় সংকল্প এবং সাহস এর বলিয়ান হয়ে ওঠে। 

মুসলিম লীগের পরাজয় 

ভাষা আন্দোলনের প্রতি পূর্ববাংলার মানুষের সার্বিক সমর্থন করে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক নির্বাচনে মুসলিম লীগের সূচনা ও পরাজয় ঘটে। রাজনৈতিক ঐক্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রনক জহান তার এক গ্রন্থে বলেছিলেন ভাষা আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানের দুইটি অংশের মধ্যে তিক্ততা 

এবং পারস্পরিক সন্দেহে সৃষ্টি হয় এছাড়াও এই আন্দোলন ছাত্র সমাজকে একটি প্রচ্ছন্ন মূলক রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করে এবং ছাত্র বুদ্ধিজীবী ও পেশাদার শ্রেণীদের গঠনের সূত্রপাত করে এতে বাঙালি ঐক্যবদ্ধতা শিখে 

এবং তাদের ঐক্যবদ্ধতার কারণে পরবর্তী সময়ে প্রতিটি আন্দোলনে তারা সফলতা নিয়ে আসে বাংলা রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাঙালিরা একত্রই তো হতে পেরেছিল এবং এখানে হিন্দু ও মুসলিম প্রত্যেকে একসাথে আন্দোলনের যোগদান দিয়েছিল। 

স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা 

এই আন্দোলন হতে বাঙালি জাতির ধাপে ধাপে সামগ্রিক স্বাধীনতা অর্জনের পথে আরও অগ্রসর হয়ে উঠেছিল তারা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য আরো বেশি সচেতন হয়ে উঠেছিল এবং এই বৈষম্য থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য 

তারা নিজেদের জন্য লড়াই করেছিল এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানি শাসকদের হারিয়ে তারা বাংলা ভাষাকে জিতেছিল। বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা নিজেরাই এই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। 

রাজনীতিতে নতুন যুগের সূচনা 

এই ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই প্রগতিশীল ও গ্রন্থ গণতন্ত্র মনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঐক্যবতী হয় মুসলিমদের অভ্যন্তরীণে কোন দলে জর্জরিত উপাদান গুলো একত্রিত হয়ে তারা ভাষা আন্দোলনের যোগ দিয়েছিল।

মুসলিম লীগ ভাষা আন্দোলনের বিরোধিতা করলে উদাহরণ পন্থি ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতার নবগঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগ যোগদান করে ভাষা আন্দোলনের জরুরি হয়ে বাঙালীরা ৫৪ যুক্ত ফ্রন্টে নির্বাচনে মুসলিম লীগকে ধরাশই করে। 

ছাত্র সমাজ

এই ভাষা আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে ছাত্র সমাজ ছাত্ররা তারা এই আন্দোলনে রাজনৈতিক চেতনার শানীত হয়। তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রবাসে ৫৪, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন গঠিত হয় এবং 58 সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন তৈরি হয়। 

ভাষা দিবস 

১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনকে 1999 সালের 17 ই নভেম্বর জাতিসংঘের বিশেষ শাখা ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত প্রদান করেন তারপর থেকে আমরা প্রতি একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা ফুল দিয়ে তাদেরকে স্মরণ করি। পৃথিবীতে বাংলাদেশ একমাত্র যে নিজেদের রাষ্ট্রভাষাকে পাওয়ার জন্য নিজেদের রক্তের বন্যা বইয়েছেন। 

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব সম্পর্কে যদি ভাষা আন্দোলনের জন্য তারা লড়াই না করত বাঙালিরা প্রতিবাদ না করত তাহলে হয়তো আজকে আমাদের এই মুখের ভাষা আর থাকত না আমাদের প্রত্যেককে অন্যের ভাষায় কথা বলতে হতো

এবং আমরা হয়তো কখনোই আর বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ করতে পারতাম না মূলত এই ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালির জাতীয়তাবাদের পরিচয় পাওয়া যায় এবং তারা এই আন্দোলনের মাধ্যমেই নিজেদের বৈষম্য থেকে নিজেদেরকে মুক্তি দিতে পারে।

লেখক এর শেষ কথা 

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন ১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলন এর গুরুত্ব সম্পর্কে যদি ১৯৭১ সালের ভাষা আন্দোলন না হতো তাহলে হয়তো বাঙ্গালীদের মধ্যে জাতীয়তাবাদ জাগ্রত ঘটনা এমনকি বাঙালিরা হয়তো আজকের এই দিনে স্বাধীন হতে পারত না। দাই এককথায় বলা যায় যে ১৯৭১ এর ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব প্রচুর ভাষা আন্দোলনের কারণেই বাঙালিরা আরো বেশি সক্রিয় হয় এবং প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url